ঢাকা,সোমবার, ৬ মে ২০২৪

৪শ বছরের পুরনো রহস্যময় এক গাছ

রামু প্রতিনিধি ::

কথায় বলে, নামে আছে কাজে নেই। রামুর গর্জনবুনিয়া বা গর্জনিয়া এলাকাটি সে রকম উদাহরণের সাক্ষী। বৃহত্তর গর্জনিয়া এলাকা ১৯৭৩ সালে গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া ও ঈদগড় ইউনিয়নে বিভক্ত হয়। এলাকাটি নামে গর্জনিয়া হলেও বর্তমানে এখানে কোনো গর্জন গাছ ও বৈলাং গাছ নেই। এখানে একসময় বনের পর বনে গর্জন, জাম, বৈলাংসহ নানারকম গাছ ছিল। পাহাড়ের পর পাহাড় ছিল গাছে ভরা। কালের পরিক্রমায় আজ সব গর্জন ও বৈলাংগাছ হারিয়ে গেলেও বর্তমানে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ৪শ বছরের পুরনো বিশালাকার রহস্যময় একটি গাছ। সেটি একটি বৈলাং গাছ।

গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আবদু শুক্কুর বলেন, শুধু পুরনো নয়, গাছটি রহস্যময়ও। গাছটিতে সহজে কেউ দায়ের কোপ দেয় না। দিলে রক্তের মতো লালা বের হয়। আর কেউ কোপ দিলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আবদু শুক্কুর গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ প্রতিবেদকের সাথে গাছের পাশে যেতে চাননি। একই কথা বলেন কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার নুরুজ্জামান। তিনি বলেন, এটি বৈলাং নয়, গুটি বৈলাং। কয়েক লাখ টাকা মূল্যের বিশাল এ গাছটি জেলার একমাত্র পুরনো গাছ। তার বাপ–দাদারাও গাছটি এভাবে দেখেছেন। তিনি একসময় গাছের ব্যবসা করতেন বলেও জানান।

স্থানীয়দের মতে, একসময় এই পাহাড়ে অনেক বৈলাং গাছ ছিল। গর্জন গাছ ছিল অগণিত। এসব এখন স্মৃতি। এখানে আর কোনো মূল্যবান গাছ নেই। আছে শুধু আকাশ ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বৈলাং। গতকাল গিয়ে দেখা যায়, গাছটির চারপাশের মাটি সরিয়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। হয়ত কাটতেও চেয়েছিল, কিন্তু পারেনি।

স্থানীয়রা বলছেন, রহস্যঘেরা এ গাছে জাদু আছে। রাতে এ গাছের নিচে অনেক সময় আগুন জ্বলে। দিনে কেউ দা দিয়ে কোপালে রক্ত ঝরে। গাছটি ছুঁলেই জ্বর ওঠে। এ জন্য বনদস্যুরা গাছটি কাটতে পারেনি।

স্থানীয় মৌলভৗ কাটাস্থ রামুর কচ্ছপিয়া বনবিট কর্মকর্তা তপন কান্তি পাল জানান, তার অধীনস্থ সংরক্ষিত বনে এই গাছ। তিনি বিষয়টি জানেন। কচ্ছপিয়ার একটি শাহ সুজা সড়ক, আরেকটি হলো এই বৈলাং গাছ। এ দুটি ঐতিহাসিক স্মৃতির মধ্যে বৈলাং গাছটি সংরক্ষণ করতে তিনি তৎপরতা শুরু করেছেন।

কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু মো. ইসমাঈল নোমান বলেন, রহস্যময় গাছটির বিষয়ে সম্প্রতি তিনি শোনেছেন।

রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহজান আলী বলেন, রহস্যময় গাছটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।

পাঠকের মতামত: